অনলাইন ব্যবসা - ঘরে বসে অনলাইন ব্যবসা
বিভিন্ন পণ্য নিয়ে অনলাইন ব্যবসাটা এখন একটা ট্রেন্ড হয়েগেছে। আগে সাধারণত বিভিন্ন পণ্য বিক্রির কাজ গুলো ছেলেরাই করতো৷ কিন্তু বর্তমানে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও বিভিন্ন পণ্য বিক্রির পেশায় এসেছে। বিভিন্ন বড় বড় মার্কেট গুলোতে মেয়েরাও ফ্লোর নিচ্ছে এবং ব্যবসা করছে। তবে বর্তমানে অনলাইনে বিভিন্ন পণ্য বিক্রির ব্যবসাটা অনেকটাই রমরমা। কারণ এতে করে ছেলে-মেয়েদের/ব্যবসায়ীদের মার্কেট যাওয়ার ঝামেলা নেই।
নিজের ঘরেই করা যায় বলে ফ্লোর ভাড়া নেয়ার কোনো প্রয়োজন পরে না। এতে করে অনেক টাকা সেভও হয়ে থাকে। ঘরে বসে নিজের ইচ্ছে মতো লাইভ করে, অনলাইন বিভিন্ন একাউন্টে বা পেজে পোস্ট করে বিভিন্ন পণ্যের ছবি আপলোড করে কাস্টমারকে আকর্ষণ করা হয় এবং ভালো বিক্রিও হয়ে থাকে। এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা অনলাইন ব্যবসা বা পণ্য বিক্রির জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আশা রাখছি আলোচনার শেষ পর্যন্ত আপনি আমাদের সাথেই থাকবেন।
অনলাইনে ব্যবসা শুরু করার আগে আমাদের প্রথমেই জানতে হবে অনলাইন ব্যবসা আসলে কাকে বলে বা অনলাইন ব্যবসা আসলে কি?
অনলাইনে ব্যবসা কাকে বলে?
"বর্তমান সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে যে ব্যবসা করা হয় তাকেই মূলতো অনলাইন ব্যবসা বলে"
আমরা মোটামুটি অনলাইন ব্যবসা কাকে বলে তা পেয়ে গেলাম। এখন অনলাইনে ব্যবসা বা পণ্য বিক্রির জন্য যে বিষয় গুলো জানা প্রয়োজন সেগুলো জানবো। চলুন মূল আলোচনায় চলে যায়-
ব্যবসায়িক ধারনাঃ কোনো কিছু করতে যাওয়ার আগে সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে বুঝে এগিয়ে যাওয়াটাই বুদ্ধি মানের কাজ। আপনি হয়তো ভাবছেন অনলাইনে ব্যবসা বা পণ্য বিক্রিতো এখন ট্রেন্ডিং-এ রয়েছে। তাহলে এতো ভাবাভাবির কি আছে? সবাই যেভাবে করছে আমরাও সেইভাবে করবো। না, আপনার ধারনাটা একেবারেই ভুল। আপনি অনলাইনে কি পণ্য নিয়ে ব্যবসা করবেন তার একটি আইডিয়া করে ফেলতে হবে সবার আগে।
উক্ত পণ্যটির মার্কেটে কেমন চাহিদা, বিদেশি পণ্য হলে তা নিয়মিত আপনি গ্রাহকদের দিতে পারবেন কিনা, আপনি অনলাইনে আপনার পণ্য রিলেটেড অন্যান্য প্রতিযোগিদের সাথে পাল্লা দিয়ে কাজ করতে পারবেন কিনা, অন্যান্য প্রতিযোগিদের চেয়ে নিজের পণ্য বা ব্যবসাকে বেশী আপডেট রাখার চেষ্টা করতে পারবেন কিনা এই যাবতীয় বিষয় গুলো মাথায় রেখে আপনাকে একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে। আপনি যদি মনে করেন হ্যাঁ, আমি উল্লেখিত প্রশ্ন গুলোর আলোকে আমার অনলাইন ব্যবসা সাজাতে পারবো তবেই আপনি শুরু করতে পারেন।
বাজেট বা পুঁজিঃ অনলাইনে ব্যবসা করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাজেট বা পুঁজি সংগ্রহ করা। ধরুন মার্কেট প্লেসে আপনার পণ্য অনুযায়ী অন্যান্য প্রতিযোগিদের তুলনায় আপনি নিম্ন মানের সেব পণ্য নিয়ে এসেছেন তাহলে কি আপনি টিকে থাকতে পারবেন? অবশ্যই না। আপনাকে অন্যান্য প্রতিযোগির তুলনায় বেশী ভালো সার্ভিস বা পণ্য অথবা তা না হলেও তাদের সমপর্যায়ের সার্ভিস বা পণ্য রাখতে হবে এবং এই কাজটি করার জন্য কিন্তু আপনার ভালো একটি বাজেট এর প্রয়োজন রয়েছে। আপনি যদি বলেন আপনার বাজেট কম। তামলে আমরা সাজেস্ট করবো আপনি অন্য কিছু নিয়ে ভাবুন।
আরো পড়ুন
কারণ মার্কেট এখন যেমন ট্রেন্ডিং-এ রয়েছে ঠিক তেমনি ব্যাপক প্রতিযোগিতাও রয়েছে। এই বিশাল প্রতিযোগিতার বাজারে আপনি স্বল্প পুঁজি নিয়ে ব্যবসা করতে পারবেন না। আপনি অল্প বাজেট বা স্বল্প পুঁজি নিয়েও অনলাইন ব্যবসা বা পণ্য বিক্রি শুরু করতে পারেন তবে এতে আপনার অনেক পরিশ্রম ও সময়ের প্রয়োজন হবে। এতে আপনার সফল হওয়ার তুলনায় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। তবে আপনাকে আমরা নিরুৎসাহিত করবো না। আপনি শুরু করতে পারেন। ব্যবসায় লাভ-লস হবেই। জয়ী হতে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
পেজ এবং ওয়েবসাইটঃ মনে রাখবেন অনলাইনে ব্যবসা বা পণ্য বিক্রি করতে হলে অবশ্যই আপনাকে কাস্টমারের কাছে বিশ্বস্ত হতে হবে। আপাকে একজন মানুষ চেনে না যানে না তাহলে সে আপনাকে কিভাবে বিশ্বাস রাখবে? জ্বি, এই বিশ্বাসটা অর্জন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে আপনার অনলাইন ব্যবসা বা পণ্য রিলেটেড একটি একাউন্ট বা পেজ থাকতে হবে এবং পাশাপাশি আপনার একটি ওয়েবসাইটও থাকতে হবে আপনার ব্যবসা বা পণ্য সম্পর্কিত।
কাস্টমার যখন দেখবে যে আপনি সুন্দর ভাবে আপনার একাউন্ট বা পেজ এবং ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে ব্যবসা করছেন তখন সে আপনাকে বিশ্বাস করতে শুরু করবে এবং আপনার কাছে পণ্য অর্ডার করবে। আপনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর একাউন্ট বা পেজ এবং ওয়েবসাইট ছাড়া কোনো ক্রমেই অনলাইন ব্যবসা করতে পারবে না।
আরো পড়ুন
ট্রেড লাইসেন্সঃ আইনসম্মত ভাবে যদি আপনি ব্যবসা করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনি একটি ট্রেড লাইসেন্স করে নিবেন ( আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত অনলাইন ব্যবসার জন্য আলাদা কোনো ট্রেড অপশন চালু হয়নি। আপনাকে ব্যবসা বা পণ্য রিলেটেড ক্যাটাগরিতে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে )। এতে করে আপনার অনেক ধরণের সুবিধা হবে। আপনার পণ্য লিগ্যেল হলে আপনি আইনি কোনো ঝামেলাই তো পরবেনই না উল্টো বিভিন্ন প্রয়োজনে তাদের সহায়তা পাবেন। এছাড়াও ট্রেড লাইসেন্স এর আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে।
যোগাযোগ রাখুনঃ যে কোনো ব্যবসার জন্যই কাস্টমারের সাথে যোগাযোগ রাখার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে সেই কাস্টমার পুনরায় আপনার নিকট আসার সম্ভাবনা অনেক বেশী৷ অতএব নিয়মিত কাস্টমারের সাথে যোগাযোগ রাখার মন-মানসিকতা রাখতে হবে। কাস্টমার যে পণ্য নিলো তা ব্যবহার করে কাস্টমার কেমন বোধ করছেন, কোথাও কোনো সমস্যা আছে কিনা, প্রয়োজনে যোগাযোগ করে রিসার্ভিস প্রদান করতে হবে। এতে করে কাস্টমার আপনার বা আপনায় অনলাইন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের উপর জোড়ালো বিশ্বাস রাখবে।
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলের আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে আশা করছি একটি পরিস্কার ধারনা পেয়েছেন। আমরা আপনার মঙ্গল কামনা করি। এই আর্টিকেল সংক্রান্ত বিষয় সম্পর্কে যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন। আমরা আপনার কমেন্ট বা প্রশ্ন এর যথাযথ ভাবে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো। এছাড়া আপনি আরো কি বিষয়ে জানতে চান তা লিখেও কমেন্ট করতে পারেন।
পাঠক আমরা "চাকরি নিন" ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ও অন্যান্য প্রকাশিত চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গুলো সংগ্রহ করে প্রকাশ করি। নিয়মিত সকল ধরণের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখতে আমাদের সাইট ভিজিট করুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url