জমি লিজ নেওয়ার চুক্তিপত্র
জমি লিজ নেওয়ার চুক্তিপত্র
জমি লিজ সংক্রান্ত চুক্তিপত্র নিয়ে আলোচনা প্রথমে আমাদের জানতে হবে চুক্তিপত্র বলতে আসলে আমরা কি বুঝি। জমি সংক্রান্ত বিষয়াদি সব সময় একটু জটিল প্রকৃতি হয়ে থাকে বিধায় আর এসব জমি জমার ব্যাপারে অংশীদারিত্বের ক্যাচালে গেলে কোন কোন ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে মূলত এই সমস্যা এড়াতে এখন জমি জমার ব্যাপারে আগেই সঠিক পদক্ষেপ হাতে নিয়ে তবেই কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে থাকে।
এতে করে উভয় পক্ষের কিংবা তৃতীয় পক্ষের বেলাতে ও ঝুঁকি কম থাকে। এমনিতে যে কোন বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হলে পরবর্তীতে সেটা কম ঝামেলায় পোহাতে হয়। তাই লিজের ব্যাপারে ও উভয় পক্ষের ক্ষেত্রে একটি চুক্তি নামা থাকলে তাহলে একটা প্রমাণ থাকে এবং পরবর্তীতে কেউ কাউকে অবান্তর প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকতে পারে এবং প্রশ্নের সম্মুখীন করে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে সাহায্য করতে পারে।
সূচি পত্রঃ
জমি লিজের চুক্তিপত্র আসলে কি
জমি লিজের চুক্তিপত্র আসলে কি
যদি কোন অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের চুক্তির বিষয়বস্তু দলিলে লিপিবদ্ধ থাকে তখন সেই দলিলটাকে অংশীদারি চুক্তিপত্র বলা হয়। অংশীদারি চুক্তিপত্রের দলিলকে অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র বা সংবিধান হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। অংশীদারি ব্যবসায়ের গঠন ,উদ্দেশ্য পরিচালনার পদ্ধতি অংশীদারদের অধিকার এবং দায়-দায়িত্ব থাকে তাকে অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র বলে। এক্ষেত্রে জমি নিজ চুক্তিপত্র বলতে বোঝানো হয়েছে যে দুইজন ব্যক্তির মধ্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা দখল কিংবা আরেকজনের ক্ষমতাশীন হওয়ার একটি নির্দিষ্ট সীমারেখা কাগজে কলমে উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে প্রকাশ পাবে এবং সুদুরপ্রসারী চিন্তাভাবনা প্রকাশ পাবে। তখন সেই চুক্তিপত্র কে জমি লিজের চুক্তিপত্র বলে।
জমি লিজ চুক্তিপত্র
- প্রথমে পরম করুণাময় মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সবার উপরে বর্ণিত থাকবে।
- পরবর্তীতে প্রথম পক্ষের (দাতা) এর নাম, ঠিকানা, ধর্ম, পেশা, জাতীয়তা, উল্লেখ করা থাকবে। উল্লেখ্য পিতা কিংবা মাতার নাম কিংবা গার্ডিয়ানের নাম লেখা আবশ্যক।
- দ্বিতীয়পক্ষের (গ্রহিতা) এর নাম ঠিকানা উল্লেখ করা থাকবে ।
- এ পর্যায়ে এসে লিজকৃত জমির বর্ণনা দলিলে থাকবে।
- এখন প্রথম পক্ষ যদি একক মালিক কিংবা ভোগদার নিযুক্ত থাকেন,সেক্ষেত্রে পক্ষের সাথে কত বছরের আবদ্ধ হতে যাচ্ছে সে বিষয়ে একটি বিশেষ বিবরণ প্রদান করতে হবে । এমত অবস্থায় দ্বিতীয় পক্ষের ভাগীদার জমি লিজ পূর্বক কত টাকা প্রদান করবেন এবং লিজকৃত জমিতে কি করা হবে বা কি করার পরিকল্পনা চলছে তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে । বিশদ আলোচনার মাঝে কোন ফাঁক ফোঁকর রাখা যাবে না যাতে কোন সমস্যা হলেও সত্যেরই জয় হয়।
- ঠিক কত তারিখ কত সাল হতে কত তারিখ, কত সাল পর্যন্ত জমির কার্যকরী হবে তা অবশ্যই সুস্পষ্টভাবে চুক্তিতে উল্লেখ থাকতে হবে।
- কোন প্রকার শর্ত উল্লেখ করা থাকলে তা এইখানে উল্লেখ করে দিতে হবে।এবং উভয়পক্ষে সম্মিলিত সম্মতিতে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে, সে বিষয়ে হালকা ধারণা দিতে পারলে ভালো হয়।
- এ পর্যায়ে এসে জমি লিজ চুক্তিপত্র বিষয়ক কিছু শর্তগুলি উল্লেখ থাকবে ,শর্তগুলি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা সাপেক্ষে কিছু সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হবে উভয় পক্ষের।
শর্তাবলী: প্রথমেই থাকবে অত্র তারিখ হতে অত্র তারিখ পর্যন্ত দলিলের অত্র বছর পর্যন্ত দলিলটি বলবৎ থাকবে । চুক্তি মেয়াদ শেষে প্রথম পক্ষের সম্মতিতে চুক্তি পত্রের কাজ বাড়ানো যেতে পারে এ বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ রাখতে হবে তা না হলে পরবর্তীতে সমস্যা হতে পারে।
- জমি লিজ সংক্রান্ত প্রথম ও দ্বিতীয় পক্ষের মধ্যকার ভাড়া আদান-প্রদানের যে চুক্তি তা নিয়ে এইখানে উল্লেখ থাকবে ।দ্বিতীয় পক্ষের অর্থাৎ গ্রহীতার কত তারিখের মধ্যে লিজ বাবদ টাকার বর্ণনা এবং পরিমাণ, নিয়ম কানুন সব লিখিত থাকতে হবে।
- লিজ উল্লেখিত দিন হতে মেয়াদ শেষ হবার দিন পর্যন্ত জমির ব্যাপারে দায়-দায়িত্ব দ্বিতীয় পক্ষের থাকবে এবং সে বিষয়ে বিস্তর আলোচনা থাকবে।
- দ্বিতীয় পক্ষের জমি ভোগের সময় প্রথম পক্ষ থেকে কোনরূপ বাধা-বিপত্তি আসতে পারবে না এবং তা গ্রাহ্য হবে না যদি এরকম কিছু আসে তাহলে সে ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে সে নিয়ে কথা বলা থাকতে হবে।
- জমির লিজের মেয়াদ থাকাকালী জমি সংক্রান্ত ট্যাক্স, খাজনা, ভুমি উন্নয়ন কর এবং অন্যান্য যাবতীয় খরচ প্রথম পক্ষ কে বহন করতে হবে।
- মেয়াদ শেষ হবার পূর্বে কোনভাবে কিংবা আইনি ব্যাপারে জড়িয়ে প্রথম পক্ষ দ্বিতীয় পক্ষকে উচ্ছেদ করতে পারবেনা। অবশ্যই মেয়াদ উত্তীর্ণ হতে হবে । তবেই কাগজপত্রের হিসাব নিকাশের সমস্যা সমাধান হতে পারবে।
- মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার আগেই কোনভাবে যদি প্রথম পক্ষ জমিতে কিছু করতে চায় অবশ্যই দ্বিতীয় পক্ষের সাথে পূর্বেই কথা বলে চুক্তিতে উল্লেখ রাখতে হবে ।নতুবা পরবর্তীতে সমস্যা দেখা দিলে দুই পক্ষই প্রমাণস্বরূপ লিখিত বক্তব্য পেশ করতে পারবে।
- চুক্তির মেয়াদ শেষে যদি দুই পক্ষের মধ্যে পুনরায় চুক্তি হবার সম্ভাবনা না থাকে, যদি উভয় পক্ষই চুক্তিবদ্ধ হতে না চায় সেক্ষেত্রে জমিতে বাউন্ডারি দেওয়া ব্যতীত বাকি সব প্রথম পক্ষের দায়িত্বে এবং অধিকারে পদার্পণ করবে।
- প্রথম পক্ষ চুক্তির মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার আগেই যদি জমি ফেরত চাই , সেক্ষেত্রে জমিতে লিজ থাকা অবস্থায় ক্ষতিপূরণ এবং সাথে আরও টাকা দ্বিতীয় পক্ষকে প্রদান করতে হবে।
- লিজ সংক্রান্ত জটিলতা পরিহার করে চলতে হবে চুক্তি সম্বন্ধীয় কোন ঝামেলা হলে দুই পক্ষের মধ্যে মীমাংসা করতে হবে নতুবা সালিশি আইন ২০০১ অনুযায়ী বিচার কার্য সম্পাদিত হবে।
- লিজকৃত জমিটি যদি কোন যদি কোন সংস্থা দ্বারা একইমিশন কিংবা রিকুজিশন করা হয় তবে সে ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থা কর্তৃক যত টাকা ক্ষতি ধার্য করা হয় তার সাথে বিনিয়োগের সমস্ত টাকা অন্যান্য খরচ সহ দ্বিতীয় পক্ষকে বুঝিয়ে দিতে হবে।
জমির তফসিল পরিচয়
জেলা,থানা,গ্রাম, মজা মৌজা, খতিয়ান নম্বর যার চৌহদ্দি এসব কিছু বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা থাকতে হবে। এবার এ পর্যায়ে এসে একটি নির্দিষ্ট বক্তব্য দিয়ে স্বাক্ষর প্রদান করতে হবে।
লেখাটি হবে এরকম
এত স্বার্থে স্বেচ্ছায় সুস্থ শরীরে এবং অন্যের দ্বারা কোন প্ররোচনার শিকার না হয়ে আমরা উভয়পক্ষ চুক্তিপত্র দলিল নিজেরা পাঠ করে অন্যের দ্বারা পড়িয়ে নিয়ে এবং সম্পূর্ণভাবে অবগত হয়ে চুক্তিপত্র এর সকল শর্ত মেনে নিয়ে অত্র দলিলের স্বাক্ষর সম্পাদন করলাম।
দলিল কয় পেজে সম্পাদিত হবে তা এখানে উল্লেখ থাকতে হবে এবং কয়েকজন সাক্ষী থাকবে তা নিয়েও বিশদ আলোচনা থাকবে এখানে।
এরপরে যথাক্রমে সাক্ষী যারা যারা থাকবে তাদের স্বাক্ষর ,নাম, ঠিকানা সহ উল্লেখ করতে হবে প্রথম পক্ষ এবং দ্বিতীয় পক্ষের নাম ঠিকানা বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে এবং স্বাক্ষর থাকবে।
" প্রিয় পাঠক" আপনার যদি আরো কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে দয়াকরে কমেন্ট করবেন। আমরা আপনার কমেন্টের যথাযথ উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো। এছাড়া আপনি আরো কি বিষয়ে জানতে চান তা লিখেও কমেন্ট করতে পারেন।
পাঠক আমরা "চাকরি নিন" সাইটের মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি ও অন্যান্য বিষয় প্রকাশিত চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংগ্রহ করে প্রকাশ করে থাকি। নিয়মিত সকল ধরণের চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
হগজ্ঝ
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url