উমরি কাজা নামাজের নিয়ত - উমরি কাজা নামাজের দলিল
উমরি কাজা নামাজের নিয়ত সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আজকের এই আর্টিকেল আপনার জন্যই। অনেক সময় আমাদের খামখেয়ালী অথবা অন্য কোন কারণে নামাজ কাজা হয়ে যায়। যার ফলে কাজা নামাজ আদায় করতে হয়। এর জন্য উমরি কাজা নামাজের নিয়ত করতে হবে। আপনাদের জানার সুবিধার্থে উমরি কাজা নামাজের নিয়ত আলোচনা করা হলো।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে উমরি কাজা নামাজের নিয়ত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে উমরি কাজা নামাজের নিয়ত সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
কনটেন্ট সূচিপত্রঃ উমরি কাজা নামাজের নিয়ত - উমরি কাজা নামাজের দলিল
উমরি কাজা নামাজের নিয়ত - উমরি কাজা নামাজের দলিলঃ ভূমিকা
আমাদের অনেকের জীবনে অনেক নামাজ কাজা হয়ে গিয়েছে। এই কাজা নামাজগুলো আদায় করে নেওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি এবং ফরজ কাজ। অনেকের জীবন্ত হয়ে ১০-১২ বছরের কাজা নামাজ বাকি রয়েছে। আমরা অনেকেই চিন্তিত হয়ে পড়ি যে এত কাজা নামাজ কিভাবে আদায় করব? আজকের এই আর্টিকেলে উমরি কাজা নামাজের নিয়ত সম্পর্কে আলোচনা করব।
আরো পড়ুনঃ মসজিদে প্রবেশের দোয়া ও মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া
এছাড়া এই আর্টিকেল থেকে আরো জানতে পারবেন উমরি কাজা নামাজের নিয়ম, উমরি কাজা নামাজ আদায়ের নিয়ম, উমরি কাজা নামাজের আরবি নিয়ত, উমরি কাজা নামাজের দলিল সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেবো। তাহলে চলুন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
উমরি কাজা নামাজের নিয়ম - উমরি কাজা নামাজ আদায়ের নিয়ম
আমরা অনেকেই মনে করে থাকি ওয়াক্তিয়া নামাজ এবং উমরি কাজা নামাজের নিয়ম-কানুনের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু এই দুই নামাজের মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য নেই। তবে নামাজের নিয়তের ক্ষেত্রে কিছু পার্থক্য রয়েছে। উমরী কাজা নামাজ আদায় করতে হলে প্রথমে কোন ওয়াক্ত নামাজ কত রাকাত কাজা হয়েছে সেই বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নিতে হবে। সেজন্য আমাদেরকে উমরি কাজা নামাজ আদায়ের নিয়ম সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী।
যদি
কোন ওয়াক্তের নামাজ কত রাকাত কাজা হয়েছে তা নির্ণয় করতে না পারি তাহলে
অনুমান করে নিতে হবে। অনুমান করতে হবে কোন নামাজ কত রাকাত কাযা হয়েছে।
ফজরের নামাজ ৭০ ওয়াক্তের কাজা হয়েছে তখন কাজা নামাজ আদায় করার সময়
এভাবে নিয়ত করতে হবে আমার জিম্মায় যত ফজরের নামাজ কাজা আছে তার অনাদায়
কৃত প্রথম ফজরের কাজা আদায় করছি।
এভাবে
নিয়ত করে নামাজ শুরু করতে হবে। এর পরবর্তীতে আমার জিম্মায় ৬৯ ওয়াক্তের
ফজরের নামাজ বাকি থাকে। তবু এভাবে নিয়ত করতে হবে যে আমার জিম্মাই যত ফজরের
নামাজ কাজা আছে তার প্রথম অণাদায়কৃত ফজরের নামাজ এর নিয়ত করছি। এভাবে
হিসাব করে নামাজ পড়তে থাকতে হবে। প্রতিবার অনাদায়কৃত প্রথম ফরজ নামাজ
বলার দ্বারা যে নামাজ বাকি আছে তার প্রথম নামাজের নিয়ত হচ্ছে।
আপনি
চাইলে কাজা নামাজ ধারাবাহিকভাবে আদায় করতে পারবেন। প্রথমে শুরু ফরজ
পড়বেন তারপর যোহর এর কাজা গুলো আদায় করবেন এভাবে কত দিনের কাজা নামাজ
পড়া হয়েছে সেটি অবশ্যই খাতায় নোট করে রাখতে হবে। আপনি যেকোনো সময় কাজা
নামাজ আদায় করতে পারবেন। তবে যে সময়গুলোতে নামাজ আদায় করা হারাম সে সময়
গুলো বাদ দিয়ে যেমন।
সূর্য
ওঠার সময়, সূর্য যখন ঠিক মাথার উপরে থাকবে তখন এবং সূর্য যখন পশ্চিম
আকাশের দিকে হেলে পড়বে এবং হলুদ ভাব ধারণ করবে তখন। এই তিন সময়ে বাদে
আপনি যেকোনো সময়ে কাজা নামাজ আদায় করতে পারবেন। প্রতিদিন কাজ হয় মাত্র
২০ রাকাত। আপনাকে নিয়ত করতে হবে সর্বপ্রথম ফজরের যে নামাজ আমার উপর কাজা
হয়েছে আমি তা আদায় করছি।
চিন্তা করে নিজের প্রবল ধারণা অনুযায়ী কত বছর কতমাস হয় তার সিদ্ধান্ত করে নিবে। এরপর উক্ত হিসাবটা নোট করে নিবে এবং এ হিসাবকেই চূড়ান্ত হিসেবে ধরে নিতে হবে। অতঃপর নিজের সুবিধা মত যখন যে নামাযের কাযা পড়ার সুযোগ হয় তাই পড়বে। তবে প্রত্যেক ওয়াক্তের সাথে ঐ ওয়াক্তের উমরী কাযা পড়া হিসাব রাখার জন্য সুবিধাজনক। কোন ওয়াক্ত ছুটে গেলে রাত্রে তা পুরা করে নিবে।
উমরি কাজা নামাজের নিয়ত - উমরি কাজা নামাজের আরবি নিয়ত
আমরা অনেকেই উমরি কাজা নামাজের আরবি নিয়ত সম্পর্কে জানি না। যেহেতু উপরের আলোচনায় উমরি কাজা নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জেনেছি তাই আমাদের অবশ্যই নামাজের আগে নিয়ত করতে হবে। বিশেষ করে উমরি কাজা নামাজের নিয়ত করা খুবই জরুরী। নামাজ শুরু করার প্রথমে আমাদেরকে নামাজের নিয়ত করে নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ 20+ নামাজের নিয়ম - পূর্ণাঙ্গ নামাজ পড়ার নিয়ম
ফজরের নামায ১০০ ওয়াক্তের কাযা হয়েছে। তখন কাযা নামায আদায় করার সময় এভাবে নিয়ত করবে, আমার জিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা আছে, তার অনাদায়কৃত প্রথম ফজরের কাযা আদায় করছি” এমন নিয়তে নামায আদায় করবে।
তারপর যিম্মায় ৯৯ ওয়াক্তের ফজরের নামায বাকি থাকে। তবু এভাবেই নিয়ত করবে যে, আমার যিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা আছে, তার প্রথম অনাদায়কৃত ফজরের নামাযের নিয়ত করছি”। এভাবে হিসেবে করে পড়তে থাকবে। এভাবে প্রথমে উমরি কাজা নামাজের নিয়ত করে নিতে হবে। নিয়ত আরবিতে করতে হবে এমন কোন কথা নয়।
যেহেতু
নিয়ত একটি অন্তরের বিষয় তাই আপনি যদি বাঙালি হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই
বাংলাতে আল্লাহতালার কাছে মনে মনে নিয়ত করলেই হয়ে যাবে। নিয়ত মুখে
উচ্চারণ করে বলতে হবে এমনটাও নয়। যদি আপনি মনে মনে আল্লাহ তায়ালার কাছে
নিয়ত করেন তাহলেই আপনার নামাজ হয়ে যাবে।
উমরি কাজা নামাজের দলিল
আমরা অনেকেই উমরি কাজা নামাজের দলিল সম্পর্কে জানি না। উমরি নামাজ কিভাবে আদায় করব সে সম্পর্কে ইতিমধ্যেই জেনেছি। উমরী কাযা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। এটাকে অস্বিকার করা হাদীস অস্বিকার করার নামান্তর। উমরি কাজা নামাজের দলিল নিচে উল্লেখ করা হলো।
"যখন তোমাদের কেউ নামায ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়ে, বা নামায থেকে গাফেল হয়ে যায়, তাহলে তার যখন বোধোদয় হবে তখন সে যেন তা আদায় করে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-আমাকে স্মরণ হলে নামায আদায় কর।" {সহীহ মুসলিম, হাদীসঃ ১৬০১}
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত, ওমর বিন খাত্তাব রাঃ খন্দকের দিন সূর্য ডুবার পর কুরাইশ কাফেরদের তিরস্কার করতে করতে এলেন। নবীজী সাঃ কে বললেন, "হে আল্লাহর নবী! আমি আসরের নামায পড়তে পারিনি এরই মাঝে সূর্য ডুবে গেছে।"
নবীজী সাঃ বললেন, "হায় আল্লাহ! আমরাওতো পড়তে পারিনি! তারপর আমরা সমতল ভূমিতে দাঁড়ালাম। আর তিনি নামাযের জন্য অযু করলেন। আর আমরাও নামাযের জন্য অযু করলাম। তারপর সূর্য ডুবে গেলেও প্রথমে আমরা আসর পড়লাম। তারপর মাগরিব পড়লাম।"{বুখারী শরীফ-হাদিসঃ ৫৭১,৫৭৩,৬১৫,৯০৩,৩৮৮৬}
উমরি কাজা নামাজের নিয়ত - উমরি কাজা নামাজের দলিলঃ উপসংহার
উমরি কাজা নামাজের দলিল, উমরি কাজা নামাজের আরবি নিয়ত, উমরি কাজা নামাজ আদায়ের নিয়ম, উমরি কাজা নামাজের নিয়ম, উমরি কাজা নামাজের নিয়ত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত।
আরো পড়ুনঃ শবে বরাতের নামাজের নিয়ম - শবে বরাতের নামাজ কয় রাকাত
আপনারা এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে সেই পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন ধন্যবাদ। ২০৮৭৬
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url