বাংলাদেশের সেরা আমের জাত
আপনি কি বাংলাদেশের সেরা আমের জাত সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কেননা আজকের আর্টিকেলটিতে বাংলাদেশের সেরা আমের জাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে। তাই বাংলাদেশের সেরা আমের জাত সম্পর্কে জানতে হলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
নিচে আপনাদের জন্য আমের জাত চেনার উপায়, বারোমাসি আমের জাত সমূহ এবং বাংলাদেশের সেরা আমের জাত ইত্যাদি বিষয়গুলো ধাপে ধাপে আলোচনা করা হয়েছে। যেখান থেকে আপনি খুব সহজেই বাংলাদেশের সেরা আমের জাত সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই দেরি না করে বাংলাদেশের সেরা আমের জাত সম্পর্কে জেনে নিন।
পেজ সূচিপত্রঃ বাংলাদেশের সেরা আমের জাত
আমের জাত চেনার উপায়
গ্রীষ্মকালের একটি অন্যতম পছন্দনীয় এবং জনপ্রিয় ফল হচ্ছে আম। গ্রীষ্মকালীন এই ফলটি খায় না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া যায় না। সকলেই এই জনপ্রিয় আম খেতে ভালোবাসে। কিন্তু কোনটি যে কি আম সেটা প্রায় অনেকেই চিনেন না। সেজন্য বাজারে আম কিনতে গেলে ক্রেতারা ব্যবসায়ীদের কাছে ঠকে যেতে পারে। এক জাতের আমের বদলে অন্য জাতের নাম কিনে আনতে পারে। তাই আমের জাত চেনার উপায় সকলেরই জানা উচিত। নিচে কিছু জাতের আম চেনার উপায় বলা হলো-
আরো পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের ফল খাবার তালিকা
গোপালভোগ আম খেতে অনেক মিষ্টি হয়। এই আমের গায়ে হলুদ ছোপ ছোপ দাগ থাকে আবার এই আমের নিচের দিকে একটু সরু হয় এবং পাকলে হলুদ হয়। আমরুপালী আম নিচের দিকে একটু সুচালো হয় এবং উপরের দিকে গোলাকার কিন্তু খেতে বেশ সুস্বাদু। লেংড়া আম দেখতে গোলাকার হয় এবং মসৃণ। রানী আম দেখতে গোপালভোগ আমের মতই কিন্তু সাইজে ছোট। এই আমের গায়েও ছোপ ছোপ দাগ রয়েছে।
বারি আম-২ বা লক্ষণভোগ আমের নাক থাকে মাঝামাঝি অবস্থানে এবং পাকলে বেশ টকটকে হলুদ রঙের হয় খেতে হালকা মিষ্টি হয়। খিসরাপাত আম খুবই মিষ্টি হয় এবং এই আমকে হিমসাগর বলা হয়। আর এই আমের সাইজ একটু বড় হয় এবং আমে হালকা হালকা দাগ থাকে। অনেকে যেখানে ভুল করে তা হচ্ছে আশ্বিনা আর ফজলি আম নিয়ে। আশ্বিনা আর ফজলি আম দেখতে একই রকম লাগে কিন্তু এক নয়। আশ্বিনা আম বেশি সবুজ কালারের হয় এবং পেট মোটা আর ফজলি আম তুলনামূলক কম সবুজ হয় এবং পাকলে হলুদ হয় আর লম্বা সাইজের হয়।
বারোমাসি আমের জাত সমূহ
আমাদের দেশে কিছু কিছু আমের জাত আবিষ্কার হয়েছে যে যে আমের জাতগুলো সারা বছর অর্থাৎ বারো মাস আম ধরবে। বাঙালি খুবই পছন্দ করে আম খেতে। বারো মাস যদি আম ধরে তাহলে তারা পছন্দমত আম খেতে পারবে এবং ফলের যে চাহিদা একজন মানুষের দৈনিক যে ফলের চাহিদা থাকে সেটিও পূরণ হবে। আজকে আপনাদের বারোমাসি আমের জাত সমূহ সম্পর্কে জানাবো।
আরো পড়ুনঃ লিচু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
বারোমাসি আমের একটি জাত হচ্ছে "বারোমাসি বারি আম-১১"। এই আমের জাতটি বছরে তিনবার ফল প্রদান করে। এই জাতের আমের গাছে নভেম্বর, ফেব্রুয়ারি এবং মে মাসে আমের মুকুল আসে এবং মে থেকে জুন এবং জুলাই থেকে আগস্ট আম আহোরণ শুরু হয়। এই জাতের আম লম্বাটে হয় এবং ওজন প্রায় ৩০০-৩৫০ গ্রাম হয়ে থাকে। এই গাছের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গাছের কোন অংশে মুকুল, কোন অংশে আমের গুটি এবং কোন অংশে পাকা আম ধরে থাকে। এই আমের জাতটি বাংলাদেশের সব এলাকায় লাগানোর উপযুক্ত এবং এটি একটি দেশিয় জাত।
বারোমাসি আমের আরেকটি জাত হচ্ছে "থাই বারোমাসি আম- কাটিমন"। এই জাতের আম খেতে খুবই মিষ্টি এবং আশ নেই বললেই চলে। এই জাতের আমের কোন সিজন অফ সিজন নেই সারাবছর ধরে। এই জাতটি থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ার মত দেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় তবে আমাদের দেশের আবহাওয়াতেও এই জাতের আম চাষ করা যায়। এই আম কাচা খেতেও মিষ্টী পাকলে আরও মিষ্টি। এই আমের ওজন প্রায় ৩০০ - ৩৫০ গ্রামের মত হয়। এই জাতের আম গাছে সবসময় মুকুল, আমের ছোট কুড়ি, পাকা আম থেকেই থাকে। আমের আটি তুলনামূলক ছোট তবে বছরে এক একটা গাছে দেড় মনের বেশি আম ধরে।
বাংলাদেশের সেরা আমের জাত
আমাদের দেশের মানুষেরা আম খেতে খুবই ভালোবাসে। গ্রীষ্মকালীন একটা অন্যতম জনপ্রিয় ফল হচ্ছে আম। বাংলাদেশে প্রায় ১ হাজারেরও বেশি জাতের আম রয়েছে। তবে সব আমগুলোর জনপ্রিয় বা সেরা আম নয়। সব আম বাজারে চলেও না। কিছু কিছু আম রয়েছে যেসব আম তাদের বৈশিষ্ট্য এবং স্বাদের জন্য বাজারে জায়গা করে নিয়েছে এবং মানুষ সেই আমগুলো খাই বেশি। এমন বাংলাদেশের সেরা আমের জাতগুলো আপনাদের জানানো হলো-
আরো পড়ুনঃ কাঠাল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- গোপালভোগ
- ক্ষীসরাপাত
- হিমসাগর
- লেংড়া
- আমরূপালী
- রানীপ্রসাদ
- ফজলি
- আশ্বিনা
- হাড়িভাঙ্গা
- ক্ষীরমান
- সূর্যপুরি
- লক্ষণভোগ
- মোহনভোগ
- গৌরমোতি ইত্যাদি
বিদেশি আমের জাত কোনটি
আমাদের দেশের কিছু গ্রামে বিদেশী জাতের আম চাষ করা হয়ে থাকে। "নাম ডক থাই" এই আমের জাতটি হচ্ছে থাইল্যনাডের একটি আম। মিয়াজাকি, সূর্যডিম আমের জাত হচ্ছে জাপানের আমের জাত। চিনের একটি আমের জাত হচ্ছে 'চিয়াংমাই'। কেইন্ড, হানি ডিউ, লতা বোম্বাই, কহিতুর, রুবি, থাই কাঁচামিঠা ইত্যাদি আমের জাতগুলো বিদেশি আমের জাত।
উন্নত জাতের আমের নাম
আমাদের দেশে প্রাকৃতিকভাবেই অনেক ধরনের ভালো জাতের আম পাওয়া যায় যেগুলো খেতে খুবই সুস্বাদু এবং ধরে অনেক। কিন্তু কালের প্রভাবে বিজ্ঞানের আবির্ভাবে এবং উন্নতিতে এখন আরও উন্নত জাতের আম আবিষ্কার হচ্ছে। ইতিমধ্যে বারি আম-১১, বারি আম-৪, বিশ্বনাথ চ্যাটার্জি, পালমারসহ বেশ কয়েকটি উন্নত জাতের আম আবিষ্কার হয়েছে যেগুলোর ফলন অনেক বেশি।
আশা করি আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন এবং বাংলাদেশের সেরা আমের জাত সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি পড়ে বাংলাদেশের সেরা আমের জাত ছাড়াও জানতে পেরেছেন উন্নত জাতের আমের নাম এবং বিদেশি আমের জাত কোনটি ইত্যাদি অনেক বিষয় সম্পর্কে। আশা করি এসকল তথ্যগুলো আপনাদের অনেক উপকারে আসবে, তাই এধরণের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেশি বেশি জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন, ধন্যবাদ। 21021.
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url