কাঁঠাল খাওয়ার উপকারীতা

 রসালো, মিষ্টি ও সুস্বাদু পাকা কাঁঠাল চলে এসেছে বাজারে। মধুমাসের অন্যতম আকর্ষণ কাঁঠাল। কেবল খেতেই মজাদার নয় এটি, পুষ্টিগুণেও ঠাসা কাঁঠাল।



 এক কাপ কাঁঠালে মেলে ১৫৫ ক্যালোরি, ৪০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৩ গ্রাম ফাইবার এবং ৩ গ্রাম প্রোটিন। এছাড়া ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, কপার ও ম্যাংগানিজেরও উৎস কাঁঠাল। জেনে নিন কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।


এলডিএল কোলেস্টেরল বা খারাপ কোলেস্টেরল হলো মোমের মতো, যা ধমনীর ভেতরের দেয়ালে লেগে থাকে। এতে রক্তের প্রবাহ বাধা পায়। ফলে রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। 


অন্যদিকে এইচডিএল কোলেস্টেরল বা ভালো কোলেস্টেরল রক্তনালী থেকে এলডিএল কোলেস্টেরল অপসারণ করতে এবং লিভারে ফেরত পাঠাতে সাহায্য করে। ২০১৫ সালের একটি গবেষণা বলছে, কাঁঠালের বিচি খেলে শরীরে উপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে।


কাঁঠাল পটাসিয়ামের একটি ভালো উৎস। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বলছে, পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।


কাঁঠালে ফাইটোকেমিক্যাল নামক পদার্থ রয়েছে, যেমন ফ্ল্যাভোনয়েড, স্যাপোনিন এবং ট্যানিন। আমেরিকান ইনস্টিটিউট ফর ক্যানসার রিসার্চের মতে, অনেক ফাইটোকেমিক্যালের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যার মানে তারা ফ্রি র‌্যাডিক্যালের প্রভাব মোকাবেলা করতে সাহায্য করতে পারে। ফলে ক্যানসারের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি কমে কাঁঠাল খেলে।


কাঁঠাল ভিটামিন সি এর একটি ভালো উৎস। এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।



 এছাড়াও কোলাজেন নামক প্রোটিন তৈরির জন্য শরীরের ভিটামিন সি প্রয়োজন, যা স্বাস্থ্যকর ত্বক, হাড় এবং সংযোগকারী টিস্যু যেমন রক্তনালী এবং তরুণাস্থি বজায় রাখার জন্য অত্যাবশ্যক। ক্ষত নিরাময়ের জন্য কোলাজেনও গুরুত্বপূর্ণ।



কাঁঠাল ও এর বিচি দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় ফাইবারের দারুণ উৎস। দ্রবণীয় ফাইবার এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং রক্তের প্রবাহে কার্বোহাইড্রেটের শোষণকে ধীর করে দিতে পারে।



 এতে খাওয়ার পরে রক্তে গ্লুকোজের স্পাইক প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। খাদ্যতালিকাগত ফাইবার একজন ব্যক্তির হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারে।


কাঁঠাল ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ। এটি এমন একটি খনিজ যা শরীরকে শিথিল করতে সহায়তা করে। ২০২১ সালের একটি গবেষণা বলছে, ম্যাগনেসিয়াম ঘুমের সমসযা দূর করতে সাহায্য করে।


কাঁঠালে এমন পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা পেটে ঘা বা আলসার তৈরি হতে বাধা দেয়। এছাড়া ফলটি ফাইবার সমৃদ্ধ, যা পেটে অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করতে পারে।


এক কাপ কাঁঠালে ৫০ গ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের সুস্থতা নিশ্চিত করে।


কাঁঠালে প্রচুর ভিটামিন এ থাকে, যা দৃষ্টিশক্তির জন্য ভালো। এই ফল খেলে চোখের ছানি পড়া, রাতকানা রোগ ও চোখের সমস্যা থেকে দূরে থাকবেন আপনি।


কলা ও আমের তুলনায় নিয়াসিন ও থায়ামিন বেশি থাকে কাঁঠালে। তাই এটি অ্যাথলেটদের জন্য একটি দারুণ এনার্জি ফুড। এটি ক্লান্তি দূর করে, পেশি সবল করে ও মস্তিষ্ক সতেজ রাখে।


 আয়রন মেলে ফলটি থেকে। এই খনিজ উপাদান রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। 


ত্বক সুন্দর রাখতে নিয়মিত খান কাঁঠাল। এতে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের অকালে বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে।


অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকে কাঁঠাল খেলে। ফলে অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দূরে থাকা যায় ও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।


কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে কাঁঠালের বিচি খেতে পারেন। এটি শরীরের রক্ত সরবরাহও বাড়ায়। 


থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য রক্ষার জন্য কপার খুব গুরুত্বপূর্ণ। কাঁঠালে থাকা কপার থাইরয়েড গ্রন্থিকে ভালো রাখে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url