গরম মসলার উপকারিতা


গরম মসলা খাওয়া কতটা উপকারী?

অনলাইন ডেসরান্নার প্রায় জন্মলগ্ন থেকেই গরম মসলার ব্যবহার হয়ে আসছে। আরে কেন হবে নাই বা বলুন! গোলমরিচ, দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, জায়ফল এবং জিরা সহযোগে বানানো এই মসলার মিশ্রণটি খাবারের স্বাদ যেমন বাড়ায়, তেমনি শরীরকে রোগ মুক্ত রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। বলেন কী মশাই, গরম মসলা শরীরের উপকারে লাগে? একেবারেই! 


একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, গরম মসলায় ব্যবহৃত উপাদানগুলোর অন্দরে এত মাত্রায় উপাকারী উপাদান রয়েছে যে তা শরীরে প্রবেশ করার পর কোনও নানাভাবে নিজেদের খেল দেখিয়ে থাকে।


 যেমন...

হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়: প্রচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের দিকে নজর ফেরালে জানতে পারবেন, সেখানে উল্লেখ রয়েছে হজম ক্ষমতার উন্নতিতে গরম মসলা নানাভাবে উপকারে লেগে থাকে। আসলে এই মসলার এই মিশ্রনটি হজমে সহায়ক পাচক রসের ক্ষরণ এত মাত্রায় বাড়িয়ে দেয় যে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে স্বাদ গ্রন্থিরা বেজায় অ্যাকটিভ হয়ে পরে। ফলে খাবার খাওযার ইচ্ছাও বাড়ে।




কনস্টিপেশনের মতো রোগের প্রকোপ কমায়: ট্রপিকাল গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি জার্নালে প্রকাশিক এক স্টাডি অনুসারে নিয়মিত গরম মসলা খাওয়া শুরু করলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের অন্দরে বর্জ্যের পরিমাণ বেড়ে যায়।



 আর এমনটা হওয়ার কারণে পটির পরিমাণ বেড়ে য়ায়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা কমতে সময় লাগে না। তাই যাদের সকালটা একেবারেই সুন্দর যায় না, তারা রান্নার সময় গরম মসলা ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন!




ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে: শুনতে আজব লাগলেও একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে- যে রান্নায় গরম মসলার ব্যবহার বাড়লে শরীরে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। আসলে এই মসলাটিকে প্রচুর মাত্রায় উপস্থিত রয়েছে অ্যান্টি-ক্যান্সার উপাদান, যা এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।



 

প্রসঙ্গত, নিউট্রিশন এবং ক্যান্সার নামক একটি জার্নালে প্রকাশিত একটি স্টাডি অনুসারে টানা দশ দিন গরম মসলা খেলে শরীরের অন্দরে টক্সিক উপাদানের মাত্রা কমাতে শুরু করে। ফলে শরীরের বিষের পরিমাণ এত মাত্রায় কমে যায় যে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। 




ডায়াবেটিস রোগকে দূরে রাখে: রক্তে সুগারের মাত্রা কি মাঝে মধ্যেই বেশ ওঠা-নামা করে থাকে? তাহলে কিন্তু বন্ধু ভুলেও গরম মসলার সঙ্গে সম্পর্ক খতম করবেন না! কারণ এই মসলার মিশ্রণটির মধ্যে থাকা দারচিনি, রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।




 আসলে দরচিনির মধ্যে থাকা একাধিক উপকারী উপাদান ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ধারে কাছে ঘেঁষার সুয়োগই পায় না। তাই যাদের সুগার লেভেল একবারে বর্ডারে রয়েছে, তারা হয় দারচিনি, নয়তো গরম মসলা খেতে ভুলবেন না যেন! 




হার্টের ক্ষমতা বাড়ায়: পরিবারে কি কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজের ইতিহাস রয়েছে? উত্তর যদি হ্যাঁ হয় বন্ধু, তাহলে যত বেশি মাত্রায় সম্ভব রান্নায় গরম মসলার ব্যবহার বাড়াতে হবে। কারণ এই মসলার মিশ্রণটি শরীরে প্রবেশ করার পর খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে শুরু করে। 



সেই সঙ্গে হার্টে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ ধারে কাছে ঘেঁষারও সুয়োগ পায় না। 




সার্বিকভাবে শরীরের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে: খুব কাছ থেকে যদি গরম মসলায় ব্যবহৃত মসলাগুলোর দিকে দেখেন, তাহলে জানতে পারবেন এদের মধ্যে প্রচুর মাত্রায় মজুত রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনপ্লেমেটারি উপাদান, অ্যান্টি-ডায়াবেটিক প্রপাটিজ, অ্যান্টি-ক্যান্সার এবং কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ লোয়ারিং প্রপাটিজ, যা ছোট-বড় কোনও রোগকেই ধারে কাছে ঘেঁষতে দেয় না।




 ফলে শরীরের কর্মক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে স্বাভাবিকভাবেই আয়ু বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। 

অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমায়: গরম মসলায় উপস্থিত জিরায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় আয়রণ, যা শরীরে প্রবেশ করার পর লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন এত মাত্রায় বাড়িয়ে দেয় যে রক্ত স্বল্পতা দূর হতে সময় লাগে না। 



প্রসঙ্গত, হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url