১০ মহররমে যে আমল করবেন

 মহাররম। এটি আরবি মাস গণনার প্রথম মাস। যার মাধ্যমে শুরু হয় নতুন হিজরি নববর্ষ। প্রতিবছরের মতো আমরা আবারও একটি নতুন হিজরি নববর্ষে উপনীত হয়েছি। ইতোমধ্যে বিদায় নিয়েছে ১৪৪৫ হিজরি। আগমন ঘটেছে ১৪৪৬ হিজরির।



ইতিহাসে ইমাম হাসান ও হুসাইন রা. এর শাহাদাত বিজড়িত ঐতিহাসিক কারবালার ঘটনাটিও ঘটেছিল এই মহাররম মাসে।



প্রত্যেক মুমিন বান্দার জন্য হিজরি সন সম্পর্কে জানা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফকিহদের মতে এ সম্পর্কে জ্ঞান রাখা ফরজে কেফায়া। 


কারণ, হিজরি সন গণনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে যাবতীয় আমলের দিক নির্দেশনা। আর এ হিজরি সন গণনা করাও হয়, চাঁদের হিসাবে। চাঁদ দেখা না দেখার ভিত্তিতে। এজন্য এটিকে চন্দ্রমাসও বলা হয়। 



চাঁদ দেখার সঙ্গে রমজানের রোজা রাখা, রোজা ভেঙে ফেলা, ঈদ উদ্‌যাপন করা, ঈদুল আজহা নির্ধারণ করা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত সম্পন্ন করা হয়। 


আর এ মহররম মাসে দুটি গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে। যাতে রয়েছে গুনাহ মাফের ঘোষণা এবং তওবা কবুলের প্রতিশ্রুতি।


 


ইতিহাসে ইমাম হাসান ও হুসাইন (রা.) এর শাহাদাত বিজড়িত ঐতিহাসিক কারবালার ঘটনাটিও ঘটেছিল এই মহররম মাসে। আর সেই দিনটি ছিল ১০ মহররম। 


 


হাদিসে একাধিক বর্ণনায় এসেছে, স্বয়ং রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দিন রোজা রেখেছেন এবং সাহাবিদেরও রোজা রাখতে উৎসাহিত করেছেন। 


যা থেকে বুঝে আসে, এ দিনটি নফল রোজা রাখার মাধ্যমে উদ্‌যাপন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।


 


বিখ্যাত সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত– তিনি বলেন, আল্লাহর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করে দেখতে পেলেন যে, (মদিনার) ইহুদিরা আশুরার (১০ই মহাররম) দিনে সাওম পালন তথা রোজা রাখছেন।


 


মহররমে রোজার গুরুত্ব


 


তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কি ব্যাপার? (তোমরা এ দিনে সাওম পালন করছো কেন?) তারা বলল, এটি অতি উত্তম দিন, এ দিনে আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাঈলকে তাদের শত্রুর কবল থেকে মুক্তি দান করেছেন, ফলে এ দিনে হজরত মুসা আ. সাওম পালন করেছেন।


 আল্লাহর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তোমাদের চেয়ে মুসা আ.কে অনুসরণ করার বিষয়ে অধিক দাবিদার। এরপর তিনি এ দিনে সাওম পালন করেন এবং সাওম পালনের নির্দেশ দেন। (সহিহ বুখারি : ২০০৪)


 


‎হজরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, অপর একটি বর্ণনায় তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আশুরার দিনের রোজার চেয়ে অন্য কোনো দিনের রোজাকে প্রাধান্য দিতে দেখিনি। (সহিহ বুখারি : ২০০৬)


 


সাহাবি হজরত আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত–


এ ছাড়া একজন সাহাবির প্রশ্নের উত্তরে তিরমিজির একটি বর্ণনায় এসেছে যে, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যদি তুমি রমজানের পর রোজা রাখতে চাও, মহাররমে রোজা রাখ। 


কারণ এটি আল্লাহ তাআলার মাস। এতে এমন একটি দিন রয়েছে, যাতে আল্লাহ তাআলা একটি জাতির তওবা কবুল করেছেন। তিনি অন্য (অনাগত) জাতিকেও ক্ষমা করবেন।


সুতরাং ১০ মহররমের দিন রোজা রাখা এবং তওবা ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমল। 


এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বিগত এক বছরের গুনাহ মাফ করবেন। তওবা কবুলের মাধ্যমে ক্ষমা করবেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url